মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) ১৬ ডিসেম্বর বিভিন্ন কর্মসূচি হিসেবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং দেশবাসীকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের অসীম স্মৃতিগাঁথা ইতিহাস, গণমানুষের ত্যাগ তিতিক্ষা, বৈষম্যের শিকার এই জাতি আজ পালন করছে বিজয় দিবস ২০২৪ এবং বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি – বিআরপি’র প্রতিষ্ঠা কাল হিসেবে এবছর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে সকল কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীগণ, ভোর ৫টায় মগবাজারস্থ কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সূর্যোদয়ের সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, যথাযথ সম্মানপূর্বক জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে উত্তোলন করা হয়। এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে দলের পক্ষে, পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীগণ রওনা করেন। এদের মধ্যে ছিলেন- সদস্য সচিব-জনাব মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক – জনাব মাসুদ রানা, যুগ্ম-আহবায়ক – জনাব নাজমুল আলম, যুগ্ম-আহবায়ক – জনাব লায়ন মোঃ জাহিদ হোসেন পলাস, যুগ্ম-সদস্য সচিব – জনাব মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-সদস্য সচিব – ড. নাজমুল করিম, যুগ্ম-সদস্য সচিব – মোঃ পারভেজ প্রমুখ।
দলটি জাতীয় স্মৃতিসৌধে সকাল ৭.৩০ টায় পৌঁছে পুষ্পস্তবকসহ নেতাকর্মীগণ স্মৃতিসৌধের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সারিবদ্ধভাবে জনগণের সাথে স্মৃতিসৌধস্থলে পৌঁছে গিয়ে যথাযথ সম্মান পূর্বক পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও দোয়ার আয়োজন করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, গণমাধ্যমের অনুরোধে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দিতে গিয়ে, সদস্য সচিব জনাব তাওহিদুল ইসলাম বলেন, একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের মানুষ তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতার অর্ধশত বছরেও সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কারণ, যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। জনগণের প্রত্যাশা, নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জেনে দেশ গঠনে একসঙ্গে কাজ করবে বিআরপি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মানবিক, গণতান্ত্রিক ও সমতার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা যায়নি। এ কারণেই গত ৫ আগস্ট একটি গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। এখন স্থিতিশীল ও সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। স্থিতিশীল ও সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হলেই কেবল অসম্পূর্ণ স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। পাশাপাশি মানবিক ও বিজ্ঞানমনস্ক দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে উঠবে। বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির নেতারা নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচন পরবর্তী সরকারের কাছে অবশ্যই সংস্কার কামনা করেছেন। যা কেবল বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি – বিআরপি এখন পরামর্শ দিচ্ছে ।
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি – (বিআরপি)র প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান, আহবায়ক জনাব সোহেল রানা বর্তমানে লন্ডন থেকে তাঁর বার্তায় বলা হয়, দেশের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে বৈষম্যহীন, মানবিক এবং সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধ হতে বলেন। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস প্রণয়ন ও নব্য স্বৈরাচারী শাসনের পর একটি ম্যাসেজ যাতে তাদের মাথায় ঢুকে যে, বিপ্লবী চেতনায় লালিত এই জাতিকে আর বোকা বানানো সম্ভব নয়, দেশের সকল স্তরে স্বৈরাচারী মনোভাব ও দুর্নীতির দিন শেষ। সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা বিরোধী, ফ্যাসিবাদ কোন শক্তি যেন বাংলাদেশে আর সক্রিয় হতে না পারে, বা নতুন কোন স্বৈরাচারীর জন্ম না হয়, তার জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে সতর্ক হতে বলেন। তিনি আরও বলেন, এবার হবেই সংস্কার, সবার।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর যুগ্ম-আহবায়ক জনাব নাজমুল আলম বলেন, ‘বিজয় দিবস’- এ দেশের মানুষের মূল পরিচয়ের স্মারক। আজকের এই দিনে জাতির সূর্যসন্তান দেশের সকল শহীদের আত্মত্যাগ ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিঃস্বার্থভাবে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে একটি স্বতন্ত্র জাতিসত্ত্বা আবিষ্কৃত হয়েছে। আজকের এই গৌরবময় দিনে তাঁদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। এছাড়াও জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের পর এ বছর বিজয় দিবস পালন আলাদা তাৎপর্য বহন করছে। এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্ররা দেখিয়েছে, এ দেশের মানুষ অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না। তাঁরা দেখিয়েছেন, কীভাবে রুখে দাঁড়াতে হয়।
কেন্দ্রীয় নেতা যুগ্ম-আহবায়ক জনাব মাসুদ রানা বলেন, তরুণ প্রজন্মের রক্তের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে, সেই বাংলাদেশ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে আমরা মনে করি। কিন্তু চব্বিশের অভ্যুত্থান হলো একাত্তরের ধারাবাহিকতা।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানানো হয় এবং সকলে বিআরপি’ নামক নতুন এই রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানান এবং সকলের মাঝে পরস্পরে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি, বিজয় দিবসের এই মহান দিনে দেশের প্রতি নিজেদের গভীর ভালোবাসা এবং জাতির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কর্মীদের সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, তাঁরা যেন এই দিনটি শোভাযাত্রা, আলোচনা ও সমবেত স্মরণ্ গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে, পালনে অংশ নেন।