“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) সংবিধান ২০২৪
দ্বিতীয় অংশ: প্রস্তাবনা
আমরা, বাংলাদেশের সংস্কারমুখী, গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল নাগরিকগণ, যারা সকল স্তরের দুর্নীতি ও বৈষম্য দূর করে সমাজে ন্যায়বিচার, সমতা ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, আজ একত্রিত হয়ে “বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)” প্রতিষ্ঠা করেছি। এই সংবিধানের মাধ্যমে দলীয় কাঠামো, নিয়ম–নীতি, সদস্যপদ, নেতৃত্ব নির্বাচন এবং দলের লক্ষ্য–উদ্দেশ্য পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হলো। আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে একটি সুশাসিত, সচ্ছল, ও উদ্ভাবনী রাষ্ট্রে পরিণত করা, যেখানে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।
অধ্যায় ১: প্রাথমিক ধারণা ও উদ্দেশ্য
১.১ নাম ও পরিচিতি:
এই সংবিধানের অধীনে গঠিত দলটির নাম “বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)”।
১.২ উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য:
বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা, দুর্নীতি নির্মূল করা, এবং প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সাধন।
১.৩ মূলনীতি ও মূল্যবোধ:
একতা: জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণ।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: দলীয় ও সরকারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখা।
উদ্ভাবন: প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিটি স্তরে উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
ন্যায়বিচার: সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা এবং বিচারব্যবস্থাকে স্বাধীন রাখা।
পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ: দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরিবেশ রক্ষায় কঠোর নীতি গ্রহণ করা।
১.৪ সংবিধানের সর্বোচ্চতা:
এই সংবিধান বিআরপির সর্বোচ্চ আইন হবে। দলের সব সিদ্ধান্ত, কার্যক্রম এবং নীতিমালা এই সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। যদি কোনো বিতর্ক বা দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, তবে সংবিধানের বিধানগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।
১.৫ সদস্যদের অঙ্গীকার:
প্রত্যেক সদস্য এই সংবিধানের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য এবং দলের আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে কাজ করবেন। সদস্যরা দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন।
অধ্যায় ২: দলের সংগঠন ও কাঠামো
২.১ কেন্দ্রীয় কমিটি:
দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি হবে দলের সর্বোচ্চ নীতি–নির্ধারণী পর্যায়। কেন্দ্রীয় কমিটি দলের কর্মসূচি, পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
কমিটির মেয়াদ: ৫ বছর।
সংখ্যা: কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে সর্বাধিক ৩০০ জন।
গঠন: কমিটির সদস্যরা নির্বাচিত হবেন কেন্দ্রীয় নির্বাচনের মাধ্যমে, যেখানে দলের সকল নিবন্ধিত সদস্য ভোট দিতে পারবেন।
২.১.১ কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্ব:
নীতিনির্ধারণ: দেশের উন্নয়ন এবং দলীয় কার্যক্রমের জন্য নীতি প্রণয়ন করা।
পরিকল্পনা: স্বল্প, মধ্যম, এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন।
প্রতিবেদন: বার্ষিকভাবে দলের কার্যক্রমের প্রতিবেদন তৈরি এবং তা সকল সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা।
অর্থায়ন: দলের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ এবং তার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
দলীয় নির্দেশনা: দলের আদর্শ ও মূলনীতির ভিত্তিতে নির্দেশনা প্রদান এবং তা কার্যকর করা।
২.১.২ কমিটির গঠন:
কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকবে:
সভাপতি: দলের সর্বোচ্চ নেতা যিনি দলের মূল দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।
সাধারণ সম্পাদক: যিনি দলের দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক: যিনি দলীয় সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এবং স্থানীয় কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবেন।
অর্থ সম্পাদক: যিনি দলের তহবিল ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
প্রচার সম্পাদক: যিনি দলের প্রচারণা এবং মিডিয়া ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবেন।
আইন বিষয়ক সম্পাদক: যিনি দলের আইনগত পরামর্শ ও আইনি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
২.২ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি:
গঠন: ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে, যা স্থানীয় পর্যায়ে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
নির্বাচন প্রক্রিয়া: সদস্যদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কঠোর অনুসরণ করা হবে। বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং জনগণের সমর্থন ভিত্তিতে নেতা নির্বাচন করা হবে।
দায়িত্ব: স্থানীয় উন্নয়ন, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং জনগণের সমস্যা সমাধানে এই কমিটিগুলো কাজ করবে।
২.৩ উপ–কমিটি গঠন:
কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন উপ–কমিটি গঠন করতে পারবে। উপ–কমিটিগুলো বিশেষায়িত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠিত হবে এবং কেন্দ্রীয় কমিটিকে সহায়তা করবে।
২.৩.১ উপ–কমিটির উদাহরণ:
আর্থিক উপ–কমিটি: দলের তহবিল সংগ্রহ, ব্যয়ের হিসাব এবং অডিট পরিচালনা।
আইন উপ–কমিটি: আইনি পরামর্শ প্রদান এবং দলের আইনগত কার্যক্রম পরিচালনা।
প্রচার ও মিডিয়া উপ–কমিটি: দলের কার্যক্রমের প্রচার এবং মিডিয়া ব্যবস্থাপনা।
পরিবেশ সংরক্ষণ উপ–কমিটি: দেশের পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে বিশেষ পরিকল্পনা ও কার্যক্রম পরিচালনা করা।
২.৪ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম ফোরাম:
সাবেক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ নিয়ে একটি সম্মানীয় প্রেসিডিয়াম ফোরাম গঠন করা হবে, যারা দলের পরামর্শক হিসেবে কাজ করবেন। তারা দলের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।
অধ্যায় ৩: সদস্যপদ ও দায়িত্ব
৩.১ সদস্যপদ যোগ্যতা:
প্রত্যেক ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং দলের মূলনীতি ও মূল্যবোধে আস্থাশীল, তিনি বিআরপির সদস্য হতে পারবেন।
৩.২ সদস্যদের দায়িত্ব:
দলের সিদ্ধান্ত মান্য করা এবং তা কার্যকর করতে সাহায্য করা।
দলের কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা।
দুর্নীতি এবং সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।
দলের আদর্শ এবং নীতিমালা প্রচারে অবদান রাখা।
দলীয় কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জনগণের মতামত সংগ্রহ করা এবং তা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পেশ করা।
৩.৩ সদস্যদের অধিকার:
দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং মতামত প্রদান।
নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ।
দলের সভা ও কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করা।
দলের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া।
দলের নীতি–নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় অবদান রাখার সুযোগ পাওয়া।
৩.৪ সদস্যপদের নবায়ন:
প্রত্যেক সদস্যকে পাঁচ বছর পর পর সদস্যপদ নবায়ন করতে হবে। নবায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। সদস্যদের জন্য নিয়মিত নবায়ন প্রক্রিয়া চালু থাকবে যেখানে সদস্যপদ নবায়নের জন্য তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন হবে।
৩.৫ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন:
দলীয় সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং কর্মশালার আয়োজন করা হবে। এই প্রশিক্ষণগুলোর মাধ্যমে সদস্যরা দলীয় আদর্শ, নেতৃত্বের গুণাবলী, এবং বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার দক্ষতা অর্জন করবেন।
৩.৬ সদস্যদের অনুপ্রেরণা ও পুরস্কার:
বিআরপি দলের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখা সদস্যদের জন্য বিশেষ পুরস্কার ও স্বীকৃতি প্রদান করবে। এটি সদস্যদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা বৃদ্ধি করবে এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ আরও সক্রিয় করবে।
অধ্যায় ৪: নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া
৪.১ নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া:
বিআরপি নেতৃত্ব নির্বাচনে স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করবে। দলটির নেতৃত্ব নির্বাচন নিম্নলিখিত ধাপগুলোতে পরিচালিত হবে:
স্থানীয় পর্যায়: ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে নেতাদের নির্বাচন করা হবে।
উপজেলা ও জেলা পর্যায়: স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচিত নেতাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠন করা হবে এবং ভোটের মাধ্যমে জেলা নেতা নির্বাচন করা হবে।
কেন্দ্রীয় পর্যায়: জেলা পর্যায়ের সফল নেতাদের মধ্যে থেকে ভোটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচন করা হবে।
৪.২ দলীয় প্রধানের মেয়াদ ও সীমাবদ্ধতা:
দলীয় প্রধানের মেয়াদ: ৫ বছর।
সীমাবদ্ধতা: একজন ব্যক্তি সর্বাধিক দুটি মেয়াদে দলীয় প্রধান নির্বাচিত হতে পারবেন। একই ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৪.৩ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা:
প্রতিটি নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করবে। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের সঠিক তথ্য প্রদান এবং ভোট গণনার সময় স্বচ্ছতা বজায় রাখার দায়িত্ব পালন করবে।
৪.৪ নির্বাচন কমিশনের গঠন:
সংখ্যা: নির্বাচন কমিশনে থাকবে ৭ জন সদস্য।
মেয়াদ: নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ হবে ১ বছর।
দায়িত্ব: নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের যাচাই, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, এবং ভোট গণনা পরিচালনা করবে।
তদারকি: নির্বাচন কমিশন দেশের গণতান্ত্রিক এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার প্রতিফলন ঘটাবে। নির্বাচনী অনিয়ম, প্রভাব, বা পক্ষপাতিত্ব প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থান নেবে।
৪.৫ নির্বাচনের আপিল প্রক্রিয়া:
কোনো প্রার্থী বা সদস্য যদি নির্বাচনের ফলাফলের ওপর অসন্তুষ্ট হন, তবে তিনি নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন তিন সদস্যের একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করবে, যারা আপিলের অভিযোগ যাচাই–বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অধ্যায় ৫: কর্মসূচি ও কার্যক্রম
৫.১ পরিবেশ সংরক্ষণ:
উদ্দেশ্য: পরিবেশের সুরক্ষা ও প্রকৃতি সংরক্ষণে বিআরপি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
কর্মসূচি: প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে।
৫.২ দুর্নীতি প্রতিরোধ:
শূন্য সহনশীলতা নীতি: দলের মধ্যে ও বাইরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুসরণ করা হবে।
অভিযোগ ও ব্যবস্থা: জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫.৩ আইনি সহায়তা কেন্দ্র:
অন্যায় ও দুর্নীতির শিকারদের সহায়তার জন্য আইনি সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
৫.৪ পরিবার রক্ষা ও সহায়তা:
উদ্দেশ্য: বিআরপি বিশ্বাস করে যে একটি সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের জন্য পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দলটি পরিবারের সদস্যদের অন্যায় ও জুলুম থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
বাস্তবায়ন: পরিবার রক্ষা কর্মসূচির আওতায় আইনি সহায়তা, পরামর্শ সেবা এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য দ্রুত প্রতিক্রিয়া দল গঠন করা হবে।
৫.৫ সমাজের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
শিক্ষা: বিআরপি দেশের প্রতিটি শিশুর জন্য বিনামূল্যে এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার ব্যবস্থা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার প্রচার এবং স্কুল ড্রপআউট রোধে কাজ করা হবে।
স্বাস্থ্য: দলটি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুলভ এবং সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়া, সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মশালা ও ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে।
৫.৬ সমাজ সংস্কার:
কর্মসূচি: বিআরপি সমাজে নৈতিকতা এবং মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করবে। দলটি তরুণ সমাজকে একত্রিত করে নেতৃত্বগুণ, নৈতিক শিক্ষার প্রচার, এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা চর্চার মাধ্যমে সমাজ সংস্কারে কাজ করবে।
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য: বিআরপি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং প্রচারে ভূমিকা রাখবে। দলীয় সংস্কৃতি বিভাগ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, লোকজ সংস্কৃতি প্রচার, এবং সাংস্কৃতিক চর্চা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগী হবে।
অধ্যায় ৬: প্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ভাবন
৬.১ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম:
বিআরপি একটি মোবাইল ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করবে, যার মাধ্যমে দলের সদস্যরা সাপ্তাহিক মিটিং, যোগাযোগ এবং কর্মসূচি পরিচালনা করতে পারবেন।
৬.২ অনলাইন মিটিং:
সাপ্তাহিক অনলাইন মিটিংয়ের মাধ্যমে দলের কর্মসূচি ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে।
৬.৩ উদ্ভাবন কর্মসূচি:
বিআরপি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে উদ্ভাবন চর্চা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি পরিচালনা করবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও উদ্ভাবন কাজে উৎসাহ দেওয়া হবে।
৬.৪ ডিজিটাল স্বচ্ছতা:
বিআরপি তার সকল কর্মকাণ্ডে প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবে। দলীয় অর্থব্যবস্থা, সদস্য নিবন্ধন, এবং কর্মসূচি পরিচালনা হবে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, যাতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়। দলীয় তহবিল ব্যবস্থাপনা এবং তদারকি হবে একটি ব্লকচেইন ভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, যা সবার কাছে উন্মুক্ত থাকবে।
অধ্যায় ৭: সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার
৭.১ সামাজিক সমতা:
সমাজের সকল স্তরে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দলটি কাজ করবে।
৭.২ মানবাধিকার:
দেশের প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষায় বিআরপি দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করবে।
৭.৩ নারী ও শিশুদের অধিকার:
নারী ও শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। তাদের প্রতি অন্যায় ও সহিংসতা প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
৭.৪ শ্রমিক ও কৃষকের অধিকার:
বিআরপি দেশের শ্রমিক ও কৃষকদের অধিকার রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণের জন্য দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। কৃষকদের জন্য সুলভ মূল্যে কৃষি উপকরণ, উন্নত বীজ, এবং সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করা হবে।
৭.৫ নির্যাতিতদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র:
বিআরপি নারী, শিশু এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর হওয়া অন্যায় ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। দলটির অধীনে একটি বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র গঠন করা হবে, যেখানে নির্যাতিতরা বিনামূল্যে আইনি, মানসিক এবং সামাজিক সহায়তা পাবেন।
অধ্যায় ৮: আর্থিক নীতি ও অডিট
৮.১ আর্থিক ব্যবস্থাপনা:
দলীয় তহবিলের ব্যবস্থাপনা এবং ব্যয় হবে স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিতার ভিত্তিতে।
৮.২ অডিট:
নিয়মিত অডিট পরিচালনার মাধ্যমে দলীয় তহবিলের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
৮.৩ তহবিল সংগ্রহ:
বিআরপি দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ করবে। সদস্যদের নিয়মিত চাঁদা, অনুদান এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করা হবে। তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে দলীয় তহবিলের হিসাব নিরীক্ষা এবং তা প্রকাশ করা হবে।
৮.৪ করপোরেট ও সামাজিক দায়িত্ব:
বিআরপি বিভিন্ন সামাজিক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান থেকে দায়িত্বশীল ও আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য অনুদান গ্রহণ করবে। তবে, দলীয় নীতিমালা অনুযায়ী, অনৈতিক বা স্বার্থপরিপন্থী উৎস থেকে কোনো তহবিল গ্রহণ করা হবে না।
Unable to load the shape
অধ্যায় ৯: সংশোধনী প্রক্রিয়া
৯.১ সংশোধনী প্রক্রিয়া:
এই সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির দুই–তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতি প্রয়োজন। সংশোধনীর ক্ষেত্রে সদস্যদের মতামত গ্রহণ বাধ্যতামূলক।
৯.২ সংশোধনী প্রস্তাবনা:
কোনো সদস্য যদি সংবিধানের কোনো ধারা সংশোধনের প্রস্তাবনা আনতে চান, তবে তা কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় উত্থাপন করতে হবে। প্রস্তাবনার স্বপক্ষে যুক্তি প্রদান এবং কমিটির সদস্যদের মধ্যে আলোচনা করার পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৯.৩ সংশোধনী গ্রহণের শর্ত:
সংবিধানের সংশোধনী গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির দুই–তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতি এবং সর্বসম্মত সমর্থন প্রয়োজন। সংশোধনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপ দলীয় রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং তা দলের সকল সদস্যদের অবগত করা হবে।
অধ্যায় ১০: দলীয় শৃঙ্খলা ও বহিষ্কার নীতি
১০.১ শৃঙ্খলাবিধি:
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১০.২ বহিষ্কার প্রক্রিয়া:
কোনো সদস্য গুরুতর অপরাধে জড়িত হলে বা দলের আদর্শের বিরুদ্ধে কাজ করলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
১০.৩ শৃঙ্খলাভঙ্গের উদাহরণ:
দলের আদর্শের বিরুদ্ধে কাজ করা।
দুর্নীতি বা অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত থাকা।
দলীয় নীতিমালা এবং সিদ্ধান্ত মানতে অস্বীকৃতি জানানো।
দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা বা জনসম্মুখে দলের বিরোধিতা করা।
১০.৪ শাস্তি প্রদান প্রক্রিয়া:
শৃঙ্খলাভঙ্গকারী সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের পর দলীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটি যথাযথ অনুসন্ধানের পর শাস্তি বা বহিষ্কারের সুপারিশ করবে। শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সদস্যের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করা হবে।
১০.৫ পুনর্বহাল প্রক্রিয়া:
কোনো সদস্য যদি নিজের দোষ স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে সংশোধনের অঙ্গীকার করে, তবে তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদনের ভিত্তিতে পুনর্বহাল করা যেতে পারে।
অধ্যায় ১১: সমাপনী
এই সংবিধান দলের সদস্য ও নেতাদের জন্য একটি পথনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে। আমাদের লক্ষ্য একটি সুন্দর, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়বিচারপূর্ণ বাংলাদেশ গঠন, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সবাই সমান সুযোগ পাবেন।
বিআরপির সদস্যরা এই সংবিধানের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবেন। আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য, সঠিক দিকনির্দেশনা, স্বচ্ছতা, এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অপরিহার্য।
বিনীত,
বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)